জামিয়া মাহমুদিয়া হামিদনগর

হামিদনগর, বাহুবল, হবিগঞ্জ
স্থাপিতঃ ২০০০ ঈসায়ী
EIIN: ০০২১৩
হামিদনগর, বাহুবল, হবিগঞ্জ
স্থাপিতঃ ২০০০ ঈসায়ী
EIIN: ০০২১৩

পরিচালনা নীতিঃ

নববী ইশারায় উপমহাদেশের ধর্মীয় ও নৈতিক সংস্কারের উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত রূহানী প্রতিষ্ঠান দারুল উলুম দেওবন্দ এর নীতিতেই এই প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হয় । যে উসুলে হাশতেগানাহ বা আট মূলনীতি এর উপর ভিত্তি করে দারুল উলুম দেওবন্দ পরিচালিত হয়, সে একই উসুল বা মূলনীতি অবলম্বন করে পরিচালিত হয় এ জামিয়া। তাছাড়া প্রতিষ্ঠান পরিচালানার বিস্তারিত নিয়মাবলী মাদ্রাসার তথ্যবইয়ে উল্লেখিত আছে।

ছাত্রদের জন্য অবশ্য পালনীয় নীতিমালা
  1.  জীবনের সকল ক্ষেত্রে শরীয়তে মুতাহ্হারার হুকুম-আহ্কাম পুরোপুরি মেনে চলতে হবে। 
  2. সাহাবায়ে কেরাম, আইম্মায়ে দ্বীন ও আকাবির-আসলাফ বিশেষ করে আকাবেরে দেওবন্দের আক্বাঈদ ও মাসলাক (মত-পথ) এর পরিপূর্ণ অনুসরণ করতে হবে। এর খেলাফ কোনো বাতিল ও গোমরাহ ফেরকার মত ও পথের সমর্থন করতে পারবে না এবং ভবিষ্যতেও এদের সংশ্রব থেকে দূরে থাকার ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকতে হবে।
  3. জামিয়ায় অধ্যয়নরত অবস্থায় রাজনৈতিক কোনো কর্মকাণ্ডে জড়াতে পারবে না এবং অন্য কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রেজিস্ট্রেশন বা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা যাবে না।
  4. ক্লাসে নিয়মিত উপস্থিত থাকা বাধ্যতামূলক এবং প্রতিদিনের সবক অবশ্যই শিখে ক্লাসে বসতে হবে।
  5. মোবাইল, টেপ-রেকর্ডার, রেডিও, ইস্তিরি, হিটার ইত্যাদি ইলেকট্রিক জিনিসপত্র মাদরাসায় ব্যবহার করতে পারবে না। বিশেষ করে মোবাইল ব্যবহার করা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। কোনো ছাত্রের কাছে মোবাইল পাওয়া গেলে তাৎক্ষনিক শাস্তিপ্রয়োগ ও মোবাইল বাজেয়াপ্ত করাসহ কর্তৃপক্ষ তাকে বহিস্কারও করতে পারেন।
  6. নির্দিষ্ট সবক ও তা’লীম-তারবিয়ত সর্ম্পকিত জামিয়ার সকল প্রোগ্রামে অবশ্যই উপস্থিত থাকতে হবে ।
  7. জামিয়ার আসবাবপত্র ও মালামাল যথাযথভাবে হেফাজত করতে হবে। পানি, বাতি, ফ্যান ইত্যাদি ব্যবহারের ক্ষেত্রে অপচয় না করে জরুরত ও পরিমাপমতো ব্যবহার করতে হবে।
  8. কারো মালামাল চুরি করা বা কারো উপর হাত তুলা বহিস্কারযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে এবং অনুমতি ব্যতিত অন্যের যে কোনো আসবাবপত্র ব্যবহার করা কঠোর শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে।
  9. যাবতীয় তামাক ও নেশাজাত দ্রব্য এমনকি ছাত্রদের জন্য পান-সুপারি খাওয়াও সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ।
  10. আকিদা-বিশ্বাস ও আমল-আখলাক বিনষ্টকারী কোনো বই-পুস্তক, পত্র-পত্রিকা, ম্যাগাজিন ইত্যাদি পড়তে পারবে না এবং এগুলো মাদরাসায় রাখাও যাবে না। 
  11. আবাসিক ছাত্ররা দারুল ইকামাসহ জামিয়ার সংশ্লিষ্ট কর্র্তৃপক্ষের অনুমোদিত ২৪ ঘণ্টার রুটিন পুরোপুরি মেনে চলতে হবে।

উপরোক্ত শর্তাবলির মধ্যে কোনো একটি শর্তের বা জরুরী অবস্থায় কর্তৃপক্ষের জারিকৃত কোনো সিদ্ধান্তের খেলাফ কর্মকাণ্ড দৃষ্টিগোচর হলে কর্তৃপক্ষ বহিষ্কারসহ যে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন। এতে ছাত্রের বা অভিভাবকের কেনো প্রকার অভিযোগ গ্রহণযোগ্য হবে না। 

মাদ্রাসায় অবস্থানকারী ছাত্রদের নির্দেশিকা
  1. ফজরের আজানের সাথে সাথে ঘুম থেকে উঠে অজু-ইস্তেঞ্জা সেরে নামাজের ১০ মি. পূর্ব পর্যন্ত কুরআন শরীফ তেলাওয়াত করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রত্যেকের নিজস্ব কুরআন শরীফ থাকা ও উন্নতমানের কাপড় দ্বারা গিলাফ লাগানো বাঞ্চনীয়।
  2. ফজরের পর মসজিদে বসেই সূরা ইয়াসিন পাঠ করবে। অতপর রুমে এসে নাস্তা পর্যন্ত সবক মুতালাআ/ মুখস্ত করবে।
  3. পূর্ণ ইহতিমাম ও গুরুত্বের সাথে দৈনন্দিন সবক মুতালাআ ও তাকরার করতে হবে। তাকরারের সময় ব্যতিত অন্যান্য সময়ে প্রত্যেকেই নিজের জন্য নির্ধাারিত স্থানে বসে পড়া-লেখা করতে হবে।
  4. দারুল ইকামার অধীনস্থ কোনো ছাত্র দারুল ইকামার জিম্মাদার উস্তাদের অনুমতি ব্যতিত জামিয়ার বাহিরে যেতে পারবে না।
  5. অন্যদের লেখাপড়ায় বিঘ্ন ঘটানো কঠোর শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
  6. জামিয়ার সকল বিভাগের ছাত্রদেরকে জামিয়ার মসজিদেই জুমআ’সহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ তাকবীরে উলার সাথে আদায় করতে হবে এবং নামাযের পরবর্তী সংশ্লিষ্ট আমলগুলোর যথাযথ পাবন্দি করতে হবে। 
  7. প্রত্যেক নামাজের জামাত শুরু হওয়ার ১০ মিনিট পূর্বে নিজ নিজ কামরা তালাবদ্ধ করে মসজিদে হাজির হতে হবে। বিশেষ করে মাগরিবের নামাজের ১৫ মিনিট পূর্বে মসজিদে হাজির হতে হবে। রুম ত্যাগ করার সময় লাইট ও ফ্যানের সুইচ বন্ধ করে দিবে। বিদ্যুৎ না থাকলেও খেয়াল করে সুইচ বন্ধ করে মসজিদে যেতে হবে।
  8. আছরের পরবর্তী ইজতেমায়ী আমলের পর থেকে মাগরিবের ১৫ মিনিট পূর্ব পর্যন্ত হাতের লেখা সুন্দর করার অনুশীলন , শরীরচর্চা ও নাস্তাসহ যাবতীয় ব্যক্তিগত প্রয়োজন সেরে নিবে। তবে শরীয়ত-পরিপন্থী কোনো খেলাধুলায় অংশগ্রহণ বা অযথা বাজারে ঘুরাঘুরি করতে পারবে না।
  9. নাজিমে দারুল ইকামার অনুমতি ব্যতিত মাদরাসার কোনো দেওয়ালে পোস্টার, স্টিকার, ফেস্টুন, বিজ্ঞপ্তি, ড্রিল মেশিন ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারবে না। 
  10. ঘুমের নির্দিষ্ট সময়ে বাতি বন্ধ করে ডিম লাইট জ্বালিয়ে ঘুমিয়ে পড়তে হবে এবং নির্দিষ্ট সময়ে ঘুম থেকে জাগ্রত হতে হবে।
  11. বিশেষ কারণে নির্ধারিত সময়ের বাইরে ঘুমের প্রয়োজন হলে নাজিমে দারুল ইকামাকে অবশ্যই অবহিত করতে হবে।
  12. ঋণ আদান-প্রদান ও আর্থিক লেনদের ক্ষেত্রে জিম্মাদার উস্তাদকে আগে অবগত করতে হবে।
  13. কোনো কাজের জন্য চাঁদা উঠানোর প্রয়োজন হলে অবশ্যই কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে এবং কর্তৃপক্ষের পরামর্শ মতো খরচ করতে হবে।
  14. কোনো কারণে নিজেদের মাধ্যে ঝগড়া/বাকবিতণ্ডা সৃষ্টি হলে, নাজিমে দারুল ইকামা বা সংশ্লিষ্ট নেগরান উস্তাদের শরণাপন্ন হতে হবে। কারো উপর হাত তুলা বহিস্কারযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে।
  15. নিজের আসবাবপত্র নিজ দায়িত্বে হেফাজত করবে।
  16. মাদরাসা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার প্রতি বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে। নিয়মিত ঝাড়ু দেওয়া এবং ঝুড়ি ও ডাস্টবিনের ময়লা যথাস্থানে ফেলার ব্যাপারে সদা যত্নবান থাকতে হবে। 

 

Scroll to Top