বালিকা শাখা পরিচিতি
বালিকা শাখা
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
নাহমাদুহু ওয়া নুসাল্লি আলা রাসূলিহিল কারীম।
ইলম শিক্ষা করা প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর জন্য ফরজে আইন। আমাদের দেশের প্রচলিত সহশিক্ষা ব্যবস্থা ইসলামে অনুমোদিত নয়। তাছাড়া শতকরা ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে স্কুলের সিলেবাসে ইসলাম শিক্ষা মারাত্মকভাবে অবহেলিত। বর্তমানে স্কুল কলেজে ইসলাম শিক্ষা বা চর্চার পরিবর্তে ধর্মনিরপেক্ষতার নামে নাস্তিক্যবাদকে প্রমোট করা হচ্ছে। দেশের সাধারণ ধারার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পর্দাপ্রথার বিলুপ্তি ও ছাত্র-ছাত্রীদের অবাধ মেলামেশার কারনে মেয়েরা ইভটিজিং, ধর্ষণ, খুনের শিকার হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এমনকি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ধর্ষনের সেঞ্চুরি ও শিক্ষক কতৃক ছাত্রী ধর্ষণের মত জঘন্য ঘঠনাও ঘঠছে। যা একজন সচেতন অভিভাবকের জন্য খুবই শঙ্কার বিষয়। এমতাবস্থায় মুসলমান জনসাধারণ যাতে তাদের কন্যা সন্তানকে সুন্দর-সুশৃঙ্খল ও মনোরম পরিবেশে দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে পারেন এজন্য আমরা আমরা বিগত ২০১৯ সালের জুন মাসে হামিদনগর হযরত উম্মে সালামা রা. বালিকা মাদরাসা নামে স্বতন্ত্র বালিকা শাখা চালু করেছি। প্রথমে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা হয়েছিল। পরবর্তীতে হামিদনগর মাদরাসার নিজস্ব জায়গায় দ্বীন দরদী মুসলিম সর্বসাধারণের সহযোগীতায় প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার বর্গফুটের একটি টিনশেড ভবন নির্মাণ করা হয়। ২০২৩ সালের জুলাই মাস থেকে এই ভবনে পাঠদান কার্যক্রম চলছে।
লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য: আদর্শ পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনে মেয়েদের ইসলামী শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। যুগ-চাহিদার প্রেক্ষিতে, আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জন ও রাসুল্লাহ সা. এর প্রকৃত আদর্শকে লালন করার মাধ্যমে প্রকৃত খোদাভীরু, আদর্শ ও সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য। নারী জাতি সঠিক পথে চললে পুরো পরিবার পাবে সঠিক পথের দিশা। এ কারণেই ইসলামে নারী শিক্ষার ব্যপারে গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে। নানা ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়া আমাদের এই পল্লী এলাকার নারী সমাজকে মানসম্মত পরিবেশে উপযুক্ত ইসলামী শিক্ষা প্রদানের মহৎ লক্ষ্যকে সামনে রেখেই আমাদের পথচলা।
বিভাগ সমূহ: বর্তমানে শিশু শ্রেণি থেকে হেদায়া জামাত পর্যন্ত কিতাব বিভাগ চালু আছে। ইনশাআল্লাহ আগামী শিক্ষাবর্ষে দাওরায়ে হাদীস পর্যন্ত উন্নীত করার প্রক্রিয়া চলমান। পাশাপাশি এখানে মেয়েদের জন্য হিফজখানাও চালু আছে। বর্তমানে দুইজন শিক্ষিকার মাধ্যমে হিফজ বিভাগে ২০ জন ছাত্রীকে পবিত্র কুরআনুল কারীম হিফজ করানো হচ্ছে।
দাওয়াতী কার্যক্রম: মাদরাসার ছাত্রীদেরকে দাওয়াতের গুরুত্ব উপলব্দি করা ও দ্বীনের দায়ী হিসাবে গড়ে তোলার জন্য প্রতি সপ্তাহে তালিমের ব্যবস্থা আছে। সাপ্তাহিক তালিমে ছাত্রীরা ছাড়াও এলাকার মহিলাগণ উপস্থিত হয়ে নামায-রোযা, পবিত্রতা, ইসলামি তরিকায় সংসার ও সন্তান প্রতিপালনসহ ইসলামের মৌলিক বিষয়াদি সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করে থাকেন।
শিক্ষক ও শিক্ষার্থী: ১৪ জন অভিজ্ঞ শিক্ষিকা দ্বারা পরিচালিত এই শাখায় অধ্যয়ণরত ছাত্রী সংখ্যা প্রায় ৩৫০ জন।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা:
১. পর্যায়ক্রমে মাদরাসায় দাওরায়ে হাদীস চালু করা।
২. কারিগরি শিক্ষা (সেলাই, হস্তশিল্প, কম্পিউটার) চালু করা।
৩. মেয়েদের জন্য স্বতন্ত্র ক্যাম্পাস গড়ে তোলার লক্ষ্যে জমি ক্রয় এবং ভবন নির্মাণ।
মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকল নেক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার তাওফিক দান করুন। মাদরাসা দাতা, শুভাঙ্খাকী, শিক্ষিকা-শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ সবার প্রচেষ্ঠাকে ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন নাজাতের ওসিলা হিসেবে কবুল করুন। আমীন
০৪/১০/২০২৪ ইং